মেডিকেল নিউজ প্লাস, 13/06/2023 : মাঝে মাঝে পায়ের পাতায় খুব ব্যথা হয়। পায়ের গাঁটগুলোতে কিংবা পায়ের বুড়ো আঙুলের গাঁটেও ব্যথা হয়।
রক্ত পরীক্ষা করে অবশ্যই দেখা দরকার শরীরে ইউরিক এসিডের মাত্রা কতটা ? ইউরিক এসিড বেড়ে গেলে গাঁটগুলিতে খুব ব্যথা হয়। ব্যথার জেরে মাটিতে পা ফেলাই দুষ্কর হয়ে ওঠে। জুতোও পায়ে গলানো মুস্কিল হয়। অনেক সময় পা ফুলে ওঠে। জায়গাটা গরম হয়ে যায়, লালচে হয়ে ওঠে। সেটা অবশ্য সেলুলাইটিসের লক্ষণ।
এখন জানতে হবে ইউরিক এসিড বাড়ে কেন। এখনকার ব্যস্ত জীবন যাত্রায় আমরা এমন অনেক খাবার খাই যে খাবারগুলিতে প্রোটিন অনেক বেশি থাকে। যদি দেহে অধিক মাত্রায় পিউরিন যুক্ত প্রানীজ প্রোটিনের বিশ্লেষন বেশি হয়ে যায় তাহলেই ইউরিক এসিডের মাত্রাও বেড়ে যায়। যেমন যদি অধিক মাত্রায় রেড মিট অর্থাৎ মাটন, ডিম, মেটে ইত্যাদি বেশি খাওয়া হয় তাহলে শরীরে প্রোটিনের মাত্রা অনেকটা বেড়ে যায়। নিয়মিত এই ধরনের খাদ্যাভ্যাস শরীরে ইউরিক এসিডের মাত্রা অনেকটা বাড়িয়ে দেয়।
ইউরিক এসিড হল রক্তে পাওয়া এক ধরনের রাসায়নিক যা তৈরি হয় যকৃতে। আবার পিউরিন যুক্ত খাবার হজমের সময়ও তৈরি হয়। বিভিন্ন রকম ডাল (মুগ ডালে কম), মাশরুম, পালং শাক, বরবটি, শিম, কলা, আম, সবেদা, খেজুর, আখ, কিসমিস জাতীয় খাবারে পিউরিন অনেক বেশি থাকে। এমনকি বিয়ারেও বেশি থাকে পিউরিন। ইউরিক এসিড রক্তে মিশে গিয়ে কিডনিতে প্রবেশ করে। কিডনি মূত্র হিসেবে দেহ থেকে বের করে দেয়। কিন্তু রক্তে ইউরিক এসিড বেশি থাকলে কিডনি সবটা বের করে দিতে পারে না। তখনই যাবতীয় সমস্যার সূত্রপাত হয়। একে হাইপার ইউরিসেমিযা বলে।
যে সব খাবারে ফাইবার থাকে সেইসব খাবার রক্তে ইউরিক এসিডের মাত্রা কমিয়ে কিডনির সাহায্যে শরীরের বাইরে বের করে দেয়। ইসবগুল, ব্রকলি, ওটস, কমলা লেবু, আপেল, নাসপাতি, স্ট্রবেরি, ব্লুবেরি, শসা, সেলারি, গাজর, বার্লি, কলা রক্তে এসিড কমাতে কার্যকরী ভুমিকা পালন করে।
শরীরে ইউরিক এসিড যাতে না বাড়ে তার জন্য নিয়মিত হাঁটা, জগিং করা যেতে পারে। সাইকেল চালানো বেশ কার্যকরী। নাচও ভালো ব্যায়াম। মোট কথা খাদ্যাভ্যাস বদলাতে হবে। বেশি প্রোটিন আছে এমন খাবার খাওয়া চলবে না। ফাইবার যুক্ত খাবার খেতে হবে। ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। শরীরে ইউরিক এসিড ধরা পড়লে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া আবশ্যক।